যাচ্ছি আমি যাচ্ছি ক্ষয়ে একটু একটু করে…
জীবন থেকে সাতাশটি বছর ক্ষয়ে গেছে। কালের স্রোতে হারিয়ে গেছে আলোআঁধারিতে ঘিরে থাকা কতশত জীবনের গল্প, ক্ষয়ে গেছে ক্ষনজন্মা স্বপ্ন।
তবু সৃষ্টিকর্তার অসীম দয়ায় গল্প তৈরির মেশিনটি আজো সচল আছে। আমাকে এবং আমার আশেপাশের জগতকে আঁকড়ে ধরে, কখনো কখনো নিজেকেও অবাক করে আমি বেঁচেই আছি। মাঝে মাঝেই কালের যাত্রার ধ্বনি শুনতে পাই, সে কোনো রথযাত্রা নয়, সে এক অবিরাম জীবন যাত্রা।
জন্মদিন নামক দিনটিকে আমি পূর্ব-বছরের সালতামামী দিবস হিসেবে গ্রহন করি এবং নিজের ভালোমন্দ কাজের বিশ্লেষণে বসি। প্রকৃতি দেখায়, পুরুষের পৌরষ প্রকাশের বয়স আটাশ! আগে জানতাম আঠারো বছর বয়স সবচেয়ে কূ-সময়- ঐ সময়ে, যা বুঝেছি তা কিছুতেই বুঝাতে পারতাম না অথচ কেউ যখন বলতো তুমি বুঝতে পারছো না, মনে হতো আমি সবই বুঝতে পারি। আমাকেই কেউ বুঝে না!
অথচ আটাশ?
সে তো আরো ভয়ঙ্কর!
যা বুঝি, অতি যত্নকরে তা না বোঝার মত করে থাকি। জীবন এখানে এক বিশাল বিদ্যাপীঠ, কেবল শিখেই যাচ্ছে। তীব্র অনুভব হয়, আমার যে কিছুই জানা হলো না!
আগেকার প্রতিটি বছর নিয়ে একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকতো। এখন আমার জীবন চক্র যে পথে ঘুর্নায়মান, নিউক্লিয়ারের প্রতি তার যেন কোনো আকর্ষনই নেই! তাই হয়তো হৃদয়টা দিনকে দিন বৈরাগ্যতে আসক্ত হয়ে পড়ছে। বৈরাগ্যের কোনো লক্ষ্য থাকে না, জীবনকে সময় স্রোতে এলিয়ে দিয়ে সকল প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির হিসেবকে উপেক্ষা করাই বৈরাগ্য।
বাস্তবতার রোষানলে আটকে থাকা জীবনে স্থিরতার কোনো সংজ্ঞা নেই। চলমান সময় স্রোতে এলিয়ে চলে জটিলতা উপেক্ষা করার নামই যদি নির্লিপ্ততা হয়, তবে আমার হৃদয়পূরের লক্ষ্য নির্লিপ্ত বৈরাগ্যতা…
যারে ঘর দিলা, সংসার দিলারে। তারে বৈরাগী মন কেন দিলারে, দয়াল?